News Hungama:
‘ধর্ম’ শুধুমাত্র ধর্মীয় রীতি-নীতি বা আচার বোঝায় না, বরং এটি নৈতিকতা, সামাজিক কর্তব্য, সংস্কৃতি, দর্শন এবং সভ্যতার ভিত্তি-নির্মাণে ব্যবহৃত বিস্তৃত ও গভীর একটি ধারণা।
সেই ভাবনা থেকেই আইআইটি ভুবনেশ্বর-এ শুরু হল প্রথম বার্ষিক ধর্ম স্টাডিজ সম্মেলন । যেখানে ধর্মকে একটি গবেষণা-নির্ভর, আন্তঃবিভাগীয় একাডেমিক ক্ষেত্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে নেওয়া হয়।
তিন দিনব্যাপী এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন শিক্ষা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা অংশ নিচ্ছেন।
এই সম্মেলনের আয়োজন করা হয় একাধিক শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠানের যৌথ উদ্যোগে যেমন বানারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগ, ভুবনেশ্বরের ভক্তিবেদান্ত ইনস্টিটিউট, আইআইটি রূড়কির হিউম্যানিটিজ ও সোশ্যাল সায়েন্সেস বিভাগ, কলকাতার ভক্তিবেদান্ত রিসার্চ সেন্টার, সাম্মাক্কা সারাক্কা সেন্ট্রাল ট্রাইবাল ইউনিভার্সিটি, ফ্লেম ইউনিভার্সিটির ইন্ডিয়া সেন্টার এবং হায়দরাবাদের ইএফএল ইউনিভার্সিটি।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গোবর্ধন ইকোভিলেজের ডিরেক্টর ও ইস্কন গভর্নিং বডি কমিশনের সদস্য শ্রী গৌরাঙ্গ দাস। সভাপতিত্ব করেন আইআইটি ভুবনেশ্বরের পরিচালক প্রফেসর শ্রীপদ কামালকার। সম্মেলনের আহ্বায়ক ড. অক্ষয় কে. রথ ধর্মকে একটি বহুবিধ ও আন্তঃসাংস্কৃতিক গবেষণাক্ষেত্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার গুরুত্ব তুলে ধরেন।
শ্রী গৌরাঙ্গ দাস তাঁর বক্তব্যে বলেন, “আজকের পৃথিবী অভূতপূর্ব মানসিক চাপ, পরিবেশগত ভারসাম্যহীনতা ও সামাজিক ভাঙনের মুখোমুখি। ধর্ম এমন এক কাঠামো যা সমাজে পুনরায় সুষমতা ফিরিয়ে আনতে পারে। গীতার শিক্ষা পরিচয়ের স্থিরতা, উদ্দেশ্যের পবিত্রতা ও কর্মের তীব্রতা আজও সমানভাবে প্রাসঙ্গিক।
প্রফেসর কামালকার বলেন, “ধর্ম ভারতের এক অনন্য ও গভীর বোধ যার সরল অনুবাদ সম্ভব নয়। তাই এর গবেষণামূলক অধ্যয়ন আরও শক্তিশালী হওয়া জরুরি। এই সম্মেলনের মাধ্যমে আইআইটি ভুবনেশ্বর ধর্মকে একটি সভ্যতাগত ধারণা হিসেবে নতুন গবেষণার পথ উন্মুক্ত করতে চায়।”
ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন সহ-আয়োজক ড. নরেশ চন্দ্র সাহু। এ বছর দুটি বিশেষ পুরস্কারের ঘোষণাও করা হয় ভক্তিবেদান্ত রিসার্চ সেন্টার প্রবর্তিত এ.সি. ভক্তিবেদান্ত স্বামী প্রভুপাদ অ্যাওয়ার্ড এবং প্রফেসর হোশাং মার্চেন্ট প্রতিষ্ঠিত হাবিজ মার্চেন্ট সেরা প্রবন্ধ পুরস্কার।
বক্তব্য রাখেন ফ্লেম ইউনিভার্সিটির প্রফেসর পঙ্কজ জৈন, হোশাং মার্চেন্ট, রীটা ডি. শর্মা, অশোক মহাপাত্র এবং বিভিন্ন আইআইটি, কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়।
মানবিক বিজ্ঞান, আইন, বিজ্ঞান, সাহিত্য, দর্শন, সাংস্কৃতিক গবেষণা, শিক্ষাবিদ্যা ও প্রযুক্তি এই সমস্ত ক্ষেত্রের প্রতিনিধিদের সক্রিয় অংশগ্রহণে DSC 2025 ধর্মকে সমকালীন নৈতিকতা, পরিবেশচেতনা ও সামাজিক দর্শনের আধুনিক কাঠামো হিসেবে নতুন আলোচনার মঞ্চ তৈরি করেছে।

