News Hungama:
কলকাতা, ১৭ অক্টোবর, ২০২৫: ভারতের অন্যতম শীর্ষ ও বিশ্বস্ত স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান মণিপাল হসপিটালস কলকাতা আজ শহরে শুরু করল নতুন বিশেষায়িত পরিষেবা কেন্দ্র — মণিপাল ইনস্টিটিউট অফ নেফ্রোলজি অ্যান্ড ইউরোলজি (MINU)। বেঙ্গালুরু, গোয়া, মাঙ্গালোর, জয়পুর, মণিপাল, পুনে, দিল্লি, গুরগাঁও, গাজিয়াবাদ ও বিজয়ওয়াড়ায় সফলভাবে পরিচালনার পর এটি এই বিশেষ শাখার একাদশ কেন্দ্র। আধুনিক প্রযুক্তি, অভিজ্ঞ চিকিৎসক এবং রোগীকেন্দ্রিক পরিষেবার সমন্বয়ে এই ইনস্টিটিউটটি কিডনি ও মূত্রনালীর রোগের পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসার একমাত্র গন্তব্য হবে।
উদ্বোধনের দিনে প্রবীণ নাগরিকদের জন্য একটি স্বাস্থ্য সচেতনতা সেশন অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে কিডনি ও ইউরোলজি স্বাস্থ্য, প্রতিরোধের উপায় এবং জীবনযাপনের পরিবর্তনের গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা হয়। এই উদ্যোগের মাধ্যমে মণিপাল হসপিটালস আবারও সমাজকল্যাণ ও প্রতিরোধমূলক স্বাস্থ্যসেবার প্রতি তাদের প্রতিশ্রুতি জোরালোভাবে তুলে ধরল।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ড. এইচ. সুদর্শন বল্লাল, চেয়ারম্যান, মণিপাল হেলথ এন্টারপ্রাইজ প্রাইভেট লিমিটেড; ড. উপাল সেনগুপ্ত, ডিরেক্টর ও ক্লিনিক্যাল লিড – নেফ্রোলজি, মণিপাল হসপিটাল ঢাকুরিয়া; ড. দিলীপ কুমার পাহাড়ি, ডিরেক্টর – নেফ্রোলজি, মণিপাল হসপিটালস ই এম বাইপাস; ড. অর্ঘ্য মজুমদার, ডিরেক্টর ও হেড – নেফ্রোলজি, মণিপাল হসপিটাল ঢাকুরিয়া; ড. অভয় কুমার, ডিরেক্টর – ইউরোলজি ও ইউরো-অনকোলজি, মণিপাল হসপিটালস ই এম বাইপাস; এবং ড. রঞ্জন সরকার, সিনিয়র কনসালট্যান্ট – নেফ্রোলজি, মণিপাল হসপিটালস ব্রডওয়ে ইউনিট।
ড. এইচ. সুদর্শন বল্লাল বলেন, “কলকাতায় মণিপাল ইনস্টিটিউট অফ নেফ্রোলজি অ্যান্ড ইউরোলজির উদ্বোধন আমাদের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। ১৯৯১ সালে শুরু হওয়া এই স্বপ্নের প্রকল্প আজ দেশের ১১টি কেন্দ্রে সাফল্যের সঙ্গে চলছে। আমাদের লক্ষ্য এক ছাদের নিচে কিডনি ও মূত্রনালীর সমস্ত চিকিৎসা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা, শিশু থেকে প্রাপ্তবয়স্ক—সব রোগীর জন্য। মণিপাল হসপিটালস বিশ্বাস করে নিখুঁততা, সহযোগিতা ও উদ্ভাবনই উন্নত স্বাস্থ্যসেবার আসল ভিত্তি।”
ড. উপাল সেনগুপ্ত বলেন, “আমরা এখানে কিডনি রোগীদের সার্বিক ও মানবিক চিকিৎসা নিশ্চিত করতে চাই। যারা ডায়ালাইসিস বা কিডনি ট্রান্সপ্লান্টের প্রয়োজন বোধ করেন, তাঁদের জন্য আমাদের মণিপাল অর্গান শেয়ারিং অ্যান্ড ট্রান্সপ্লান্ট (MOST) প্রোগ্রাম ট্রান্সপ্লান্ট প্রক্রিয়াকে দ্রুত ও সুসংগঠিত করে, রোগী ও পরিবারের পাশে থেকে সর্বোচ্চ সহায়তা প্রদান করে।”
ড. অভয় কুমার বলেন, “রোবোটিক সার্জারি এখন ইউরোলজির ক্ষেত্রে এক যুগান্তকারী পরিবর্তন এনেছে। ভারতে বছরে প্রায় ৬০,০০০ রোবোটিক সার্জারি হয়, যার বেশিরভাগই ইউরোলজিক্যাল। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে অপারেশনের নির্ভুলতা বাড়ে, ব্যথা কমে ও রোগীরা দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠেন। আমাদের লক্ষ্য কলকাতাকে উন্নত ইউরোলজি চিকিৎসার অন্যতম কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা।”
ড. দিলীপ কুমার পাহাড়ি বলেন, “ভারতে প্রতি বছর প্রায় দুই লক্ষ রোগীর কিডনি ট্রান্সপ্লান্টের প্রয়োজন হলেও মাত্র ৫–৭ হাজারটি সম্পন্ন হয়। সচেতনতা, সময়মতো মস্তিষ্ক-মৃত্যু ঘোষণা ও অঙ্গদানের প্রসার ঘটানো অত্যন্ত জরুরি। এই ইনস্টিটিউটের মাধ্যমে আমরা দীর্ঘমেয়াদি কিডনি কেয়ার ও সমন্বিত চিকিৎসা ব্যবস্থার উপর বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছি।”
ড. অর্ঘ্য মজুমদার বলেন, “চ্রনিক কিডনি ডিজিজ (CKD) এখন বিশ্বজুড়ে এক নীরব মহামারী। ভারতে প্রায় ৭.৮ মিলিয়ন মানুষ এই রোগে আক্রান্ত। অধিকাংশই দেরিতে তা জানতে পারেন। এই ইনস্টিটিউটের লক্ষ্য প্রাথমিক স্ক্রিনিং ও সময়মতো চিকিৎসার মাধ্যমে রোগীদের আরও কার্যকর সহায়তা দেওয়া।”
ড. রঞ্জন সরকার বলেন, “পর্যাপ্ত জলপান, সুষম খাদ্য গ্রহণ ও লবণের পরিমাণ কমানো কিডনি রক্ষার মূল নিয়ম। নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও সময়মতো চিকিৎসাই দীর্ঘমেয়াদি জটিলতা এড়াতে সাহায্য করে। বিশেষ করে প্রবীণদের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করা এখন খুবই প্রয়োজনীয়।”
ড. অয়নাভ দেবগুপ্ত, রিজিওনাল চিফ অপারেটিং অফিসার, মণিপাল হসপিটালস ইস্ট, বলেন, “আমাদের উদ্দেশ্য রোগীকে এক জায়গায় সমস্ত পরিষেবা দেওয়া — পরীক্ষা, চিকিৎসা ও ফলো-আপসহ। এতে সময় ও মানসিক চাপ কমে, এবং রোগী দ্রুত সঠিক চিকিৎসা পান। মণিপাল হসপিটালস সবসময়ই মানুষের আস্থা ও যত্নের প্রতীক হিসেবে কাজ করতে চায়।”
এই উদ্বোধন ও সচেতনতা সেশনের মাধ্যমে মণিপাল হসপিটালস আবারও প্রমাণ করল — তাদের লক্ষ্য শুধু চিকিৎসা নয়, বরং প্রতিটি মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্যসচেতনতা ও সুস্থ জীবনযাপনের অভ্যাস গড়ে তোলা।